ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর প্রায় ৪ লক্ষ শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। শিশুদের ক্যান্সারের ধরন কিছুটা ভিন্নতর হয় এবং প্রত্যেকটি ক্যান্সার মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জেস থাকে।
শিশুদের সবেচেয়ে বেশি যে ক্যান্সার হয়ে থাকে তা হচ্ছে লিউকেমিয়া। এর ফলে অস্থিমজ্জায় অবস্থিত রক্ত তৈরির কোষগুলো অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই ক্যান্সারের লক্ষণসমূহ সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরী। লিউকেমিয়ার লক্ষণগুলো হচ্ছে হাড় বা হাড়ের জোড়ায় ব্যথা, অবসাদ, দূর্বলতা, ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, জ্বর এবং কোনো কারণ ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া।
মোট ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুর প্রায় চার ভাগের এক ভাগ ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত হয়। এর লক্ষণসমূহের মধ্যে রয়েছে মাথাব্যথা, বমিবমি ভাব, বমি, তন্দ্রা ভাব, ঝাপসা দৃষ্টিশক্তি এবং ভারসাম্য কমে যাওয়া।
নিউরোব্লাস্টোমা এক ধরনের ক্যান্সার যা ছোট শিশুদের স্নায়ুকোষে হয়ে থাকে। এর ফলে পেটে ব্যথা হয়, ফুলে যায় এবং জ্বর হয়।
উইলমস টিউমার (যা নেফ্রোব্লাস্টোমা হিসেবেও পরিচিত) সাধারণত ৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের কিডনিতে হয়ে থাকে। এই ক্যান্সারের ক্ষেত্রে পেটে ব্যথা ও ফুলে যাওয়া, জ্বর, বমিবমি ভাব ও ক্ষুধামন্দার মতো লক্ষণগুলো দেখা যায়।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার লিম্ফোসাইটিক কোষে লিম্ফোমা হয় এবং এর লক্ষণগুলো হচ্ছে জ্বর, ঘাম হওয়া, অবসাদ, লিম্ফনোডগুলো ফুলে যাওয়া এবং কোনো কারণ ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া।
র্যাবডোমায়োসারকোমা কংকাল পেশীতে হয়ে থাকে এবং এর ফলে আক্রান্ত স্থানে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া হয়।
রেটিনোব্লাস্টোমা একধরনের ক্যান্সার যা চোখের রেটিনায় হয়ে থাকে এবং অল্প বয়সের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বেশি হয়। এর ফলে চোখে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়। আক্রান্ত চোখের মণিতে এক ধরনের আলো দেখা যায়।
প্রাইমারী বোন ক্যান্সারের ফলে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া হয় এবং এই ক্যান্সার যেকোনো বয়সেই হতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ক্যান্সার একটু অধিক বয়সের শিশু ও কিশোরদের হয়ে থাকে।
শিশুদের নানা ধরনের ক্যান্সার এবং সেগুলোর লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরী, কারণ বিষয়গুলো জানা থাকলে প্রাক প্রাথমিক পর্যায়ে এই ক্যান্সারগুলো সনাক্ত করা ও উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করা সম্ভব।