স্ত্রীযোনিমুখের ক্যান্সার

নারীদেহের স্ত্রীযোনিমুখে এই ক্যান্সার হয়ে থাকে। সাধারণত যে ধরনের স্ত্রীযোনিমুখের ক্যান্সার হয়ে থাকে সেগুলো হচ্ছে স্কোয়ামাস সেল কারসিনোমা, অ্যাডিনোকারসিনোমা, মেলানোমা, সারকোমা এবং ভেরাকাস কারসিনোমা। অস্বাভাবিক কোষাবস্থা থেকে স্কোয়ামাস ক্যান্সারের শুরু হয় যা সময়ের সাথে ক্যান্সারে রূপান্তরিত হয় যাকে ভালভা ইন্ট্রাএপিথেলিয়াল নিওপ্লাসিয়া (VIN) বলে। VIN হচ্ছে স্ত্রীযোনিমুখে অবস্থিত কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি যা এখনো ক্যান্সারের রূপান্তরিত হয় নি কিন্তু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

VIN অল্পবয়স্ক নারীদের অধিক হয়ে থাকে এবং তা হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের (HPV) সাথে সম্পৃক্ত। বয়স্ক নারীদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের VIN এর সংক্রমণ খুবই বিরল এবং তা HPV এর সাথে সম্পৃক্ত নয়। স্ত্রীযোনিমুখ, ক্লাইটোরিস বা ল্যাবিয়া মাইনোরে মেলানোমার সংক্রমণ হয়ে থাকে।

পরিসংখ্যান
স্ত্রীযোনিমুখের ক্যান্সার খুবই বিরল এবং যে ক্যান্সারগুলো হয়ে থাকে তার মধ্যে এর সংক্রমণের হার ৬%। প্রায় ৬,১২০ জন নারী এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে। একজন নারীর বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে। এক্ষেত্রে শ্বেতাঙ্গদের ঝুঁকি বেশি থাকে। চলতি বছরে স্ত্রীযোনিমুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ১,৩৫০ জন মারা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঝুঁকির কারণ এবং লক্ষণসমূহ
প্রধান ঝুঁকির কারণসমুহের মধ্যে রয়েছে-

  • বয়স (৭০ বছরের অধিক)
  • HPV এর সংক্রমণ (হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস)
  • ধূমপান
  • HIV এর সংক্রমণ (হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস)
  • সার্ভিক্যাল ক্যান্সার
  • মেলানোমা বা দেহের অন্যান্য অংশে অস্বাভাবিক আকৃতির আঁচিল
  • পূর্বপূরুষদের কারো মেলানোমা হয়ে থাকলে

লক্ষণসমূহের মধ্যে রয়েছে স্ত্রীযোনিমুখে বা এর ভেতরে বা কুঁচকিতে (বড় আকারের লিম্ফনোড) পিন্ড সদৃশ কিছুর উপস্থিতি, চামড়ায় চাকতির মত যা স্ত্রীযোনিমুখের অন্যান্য অংশের তুলনায় দেখতে বা রং এ খানিকটা ভিন্নতর, দীর্ঘদিন ধরে চুলকানি, ব্যথা, পেশীতে ব্যথা বা স্ত্রীযোনিমুখে জ্বালাপোড়া করা, প্রস্রাবের সময় কষ্ট হওয়া, মাসিক ছাড়াই রক্ত বা তরল নিঃসৃত হওয়া, দীর্ঘদিন ধরে আলসার, দেহে বিদ্যমান আঁচিলের চেহারায় পরিবর্তন আসা, মাংসপিন্ডের মত কিছু একটার বৃদ্ধি যা অনেকটা যৌনাঙ্গের মাংসপিন্ডের মত।

প্রতিকার

  • কৈশোরের শেষের দিকে বা আরো অধিক বয়সে অনেকটা দেরিতে প্রথম যৌন মিলন করা
  • একের অধিক সঙ্গীর সাথে যৌন মিলন এড়িয়ে চলা
  • যৌন মিলনের ক্ষেত্রে এমন সঙ্গীকে এড়িয়ে চলা যে ইতিপূর্বে আরো অনেকের সাথে মিলিত হয়েছে
  • নিরাপদ সহবাস অভ্যাস করা যেমন কনডম ব্যবহার করা যদিও কনডম ব্যবহারের ফলে পুরোপুরিভাবে এইচপিভি এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করে না
  • নিয়মিত প্যাপ টেস্ট করা এবং ক্যান্সারের পূর্ব লক্ষণগুলো দেখা দিলে তার চিকিৎসা করা
  • ধূমপান ত্যাগ করা

চিকিৎসা
বর্তমানে যে চিকিৎসাগুলো প্রদান করা হয়ে থাকে তার মধ্যে রয়েছে সার্জারি (ভালভেক্টমি, লেজার সার্জারি, লিম্ফঅ্যাডিনেক্টমি, পেলভিক এক্সেনটেরেশন), কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন থেরাপি (ইন্টার্নাল রেডিয়েশন থেরাপি), টপিক্যাল থেরাপি ( ফ্লুরোইউরাসিল (5-FU), ইমিকুইমোড)। 


Fighting Cancer Desk
ফাইটিং ক্যান্সার ডেস্ক