যোনীপথের ক্যান্সার

যোনীপথের প্রাচীরে স্কোয়ামাস এপিথেলিয়াল কোষের তৈরি এক ধরনের কোষের পাতলা আবরণ থাকে, যা এপিথেলিয়াম নামে পরিচিত। এপিথেলিয়ামের নীচে থাকে কানেকটিভ টিস্যু, অনৈচ্ছিক পেশী টিস্যু, লিম্ফ ভেসেল এবং নার্ভ। যোনীপথের অস্বাভাবিক কোষগুলো যখন ক্যান্সারে পরিণত হয় তখন যোনীপথের ইন্ট্রাএপিথেলিয়াল নিওপ্লাসিয়া (VaIN) বা ডিসপ্লাসিয়া হয়ে থাকে। এই অস্বাভাবিক কোষগুলোর কারণে সার্ভিক্সে এক ধরনের ক্ষতের সৃষ্টি হয় যা সার্ভিক্যাল ইন্ট্রাএপিথেলিয়াল নিওপ্লাসিয়া (CIN) নামে পরিচিত। যোনিপথে যে ক্যান্সার হয়ে থাকে তার ৮৫% শরীরের অন্যান্য অঙ্গ যেমন সার্ভিক্স বা জরায়ু মুখ থেকে সংক্রমিত হয়ে থাকে। যোনীপথের বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে রয়েছে স্কোয়ামাস সেল কারসিনোমা, অ্যাডিনোকারসিনোমা, ক্লিয়ার সেল অ্যাডিনোকারসিনোমা, মেলানোমা এবং সারকোমাস। 

পরিসংখ্যান
যোনীপথের ক্যান্সারের সংক্রমণ অপেক্ষাকৃত কম এবং চলতি বছরে প্রায় ৬,২৩০ জন নারী এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে। যোনীপথের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পরে প্রায় ৫ বছর অবধি জীবিত থাকার হার ৪৭%। 

ঝুঁকির কারণ এবং লক্ষণসমূহ
ঝুঁকির কারণসমূহের মধ্যে রয়েছে-

  • বয়স (৫০ এবং ৭০ বছর)
  • হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের সংক্রমণ (এইচপিভি)
  • তামাক সেবন
  • সার্ভিক্সের ক্যান্সার
  • পূর্বে রেডিয়েশন থেরাপি নিয়ে থাকলে
  • ডাইইথাইলস্টিলবেস্ট্রল (ডিইএস)

লক্ষণসমূহের মধ্যে রয়েছে উন্মুক্ত ক্ষত যা থেকে রক্তপাত, ধীরে ধীরে রক্ত পড়তে থাকে বা শক্ত আবরণী তৈরি হয়, লালচে হয়ে যায়, চাকা বা ক্ষত তৈরি হতে পারে যা শক্ত হয়ে বা চুলকাতে পারে কিন্তু খুব কম ক্ষেত্রেই ব্যথা হয়ে থাকে, উজ্জ্বল গোলাপী, লাল, মুক্তোর ন্যায় সাদা বা স্বচ্ছ স্ফিত অংশ, গোলাপী আকার ধারণ করে যার কিনারা স্ফীত থাকে এবং ঠিক মাঝখানে শক্ত অংশ  থাকে, ক্ষতের মত সাদা, হলুদ বা মোমের ন্যায় অংশ যার কিনারা ঠিকভাবে বোঝা যায় না, আঁচিলের মত কিছু একটা ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছে, শক্ত আঁশটে মত লাল অংশ যার কিনারা অনিয়মিত এবং যা থেকে সহজেই রক্তপাত হতে পারে, এবড়ো থেবড়ো অংশের মত কিছু একটার বেড়ে উঠা যার মাঝখানটা নীচু। 

প্রতিকার

  • কৈশোরের শেষের দিকে বা আরো অধিক বয়সে অনেকটা দেরিতে প্রথম যৌন মিলন করা
  • একের অধিক সঙ্গীর সাথে যৌন মিলন এড়িয়ে চলা
  • যৌন মিলনের ক্ষেত্রে এমন সঙ্গীকে এড়িয়ে চলা যে ইতিপূর্বে আরো অনেকের সাথে মিলিত হয়েছে
  • নিরাপদ সহবাস অভ্যাস করা যেমন কনডম ব্যবহার করা যদিও কনডম ব্যবহারের ফলে পুরোপুরিভাবে এইচপিভি এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করে না
  • নিয়মিত প্যাপ টেস্ট করা এবং ক্যান্সারের পূর্ব লক্ষণগুলো দেখা দিলে তার চিকিৎসা করা
  •  ধূমপান ত্যাগ করা

চিকিৎসা
বর্তমানে যেসকল চিকিৎসা প্রদান করা হয়ে থাকে তার মধ্যে রয়েছে সার্জারি (ভ্যাজিনেক্টমি, হিস্টেরেক্টমি), কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন থেরাপি (ইন্টার্নাল রেডিয়েশন থেরাপি)। 


Fighting Cancer Desk
ফাইটিং ক্যান্সার ডেস্ক