অন্ডকোষ আকারে ছোট, ডিমের ন্যায় দুটি গ্রন্থি যা স্ক্রোটাম (অন্ডকোষকে ঘিরে যে ঢিলেঢালা চামড়ার আবরণ থাকে) দ্বারা সংযুক্ত অবস্থায় পেনিসের কাছাকাছি থাকে। অন্ডকোষে জননকোষ এবং অন্যান্য কোষ থাকে যা বীর্য তৈরি করে এবং টেস্টোস্টেরন হরমোন নিঃসরণ করে। বেশিরভাগ অন্ডকোষের ক্যান্সার বীর্য তৈরিকারী জননকোষে হয়ে থাকে,এদেরকে জননকোষের টিউমারও বলা হয়ে থাকে। মূলত যে ধরনের অন্ডকোষের ক্যান্সার হয়ে থাকে তার মধ্যে রয়েছে জননকোষের টিউমার, স্ট্রোমাল টিউমার এবং অণ্ডকোষের গোড়ার কারসিনোমা।
পরিসংখ্যান
৩০ থেকে ৩৯ বছর বয়সী তরুণদের মধ্যে অন্ডকোষের ক্যান্সার দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ৩০ থেকে ৩৯ বছর বয়সীদের নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৩,১০০ জন এবং ২০ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৩,০০০ জন। আক্রান্তদের গড় বয়স ৩৩ বছর। যেকোন বয়সেই এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ বছর ৯,৬১০ জন পুরুষ অন্ডকোষের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে। জীবদ্দশায় প্রতি ২৫০ জন পুরুষ ও বালকের মধ্যে ১ জন এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকে।
ঝুঁকির কারণ এবং লক্ষণসমূহ
ঝুঁকির কারণসমূহের মধ্যে রয়েছে-
- বয়স (২০-৪৫ বছর)
- ক্রিপ্টোরসিডিজম (অপরিণত অন্ডকোষ)
- পূর্বে পরিবারে কারো এমন হয়ে থাকলে
- পূর্বে নিজের ক্যান্সার হয়ে থাকলে
- লিঙ্গ (পুরুষ)
- বর্ণ (কৃষ্ণাঙ্গ)
- এইচআইভিতে আক্রান্ত ব্যক্তি
- অন্ডকোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি
- ক্লিনফেল্টার’স সিনড্রোম
অন্ডোকোষ স্ফিত হয়ে যাওয়া বা ছোট ছোট গোটার মত বা কিছু অংশ শক্ত হয়ে যাওয়া-এগুলো অন্ডকোষের ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ। অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে রয়েছে গোটার মত অংশে ব্যথা অনুভব না করা বা ফুলে যাওয়া; ব্যথা, অস্বস্তি বা দীর্ঘদিন যাবত ফুলে যাওয়া বা ফুলে যাওয়া ব্যতিরেকেই অন্ডকোষ বা স্ক্রোটামে অসাড়তা অনুভব করা, স্ক্রোটামে ভার অনুভব করার ক্ষেত্রে ভিন্নতা, তলপেট বা কুঁচকিতে মৃদু ব্যথা অনুভব করা, স্ক্রোটামে হঠাৎ করে তরল জাতীয় পদার্থ জমে যাওয়া, স্তনের জায়গাটা নরম হয়ে যাওয়া, নীচের দিকে মেরুদন্ডে ব্যথা, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, বুকে ব্যথা এবং থুতুতে বা কফে রক্ত যাওয়া ও হার্নিয়া।
চিকিৎসা
বর্তমানে যেসকল চিকিৎসা প্রদান করা হয়ে থাকে সেগুলো হচ্ছে সার্জারি (অর্কিওক্টমি, রেট্রোপেরিটোনিয়াল লিম্ফনোড ডিসেকশন (আরপিএলএনডি), নার্ভ স্পেয়ারিং পদ্ধতি, রিকনস্ট্রাকটিভ সার্জারি), কেমোথেরাপি (ব্লিওমাইসিন, এটোপোসাইড, সিসপ্লাটিন, কার্বোপ্লাটিন, জেমসিট্যাবাইন, আইফসফ্যামাইড, অক্সালিপ্লাটিন, প্যাকলিট্যাক্সেল, ভিনব্লাস্টিন), রেডিয়েশন থেরাপি। অন্ডকোষের সফল চিকিৎসা শেষে স্টেম সেল ট্রান্সপ্লানটেশনও করা হয়ে থাকে।