ঢাকা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শহর হওয়ার পাশাপাশি বিশ্বের নবমতম বৃহৎ শহর। আর জনসংখ্যার দিক দিয়ে বিচার করলে ঢাকা বিশ্বের ষষ্ঠতম জনবহুল শহর। ঢাকা দেশের অর্থনৈতিক কেন্দ্র হওয়ার কারণে সারা বছর জুড়েই এ শহর প্রচুর দূষণের শিকার হয়। বিশ্বজুড়ে বায়ুদূষণের জরিপে ঢাকার অবস্থান তৃতীয়। ঢাকার বাতাসে রয়েছে মারাত্মক দূষণ এবং এর AQI ইনডেক্স ১৮১। AQI একটি শহরের বাতাসের প্রতিদিনের গুণগত মানের ব্যাপারে তথ্য প্রদান করে এবং এর ফলে স্বাস্থ্যের উপর কেমন প্রভাব পড়তে পারে সে সম্পর্কেও ধারণা দিয়ে থাকে। এর ক্যাটাগরিটা এভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে ০ থেকে ৫০ (ভালো), ৫১ থেকে ১০০ (মোটামুটি), ১০১ থেকে ১৫০ (সংবেদনশীল মানুষদের জন্য অস্বাস্থ্যকর), ১৫১ থেকে ২০০ (অস্বাস্থ্যকর), ২০১ থেকে ৩০০ (খুবই অস্বাস্থ্যকর) এবং ৩০১ থেকে এর উপরে থাকলে (মারাত্মক ক্ষতিকর)। ঢাকা শহর প্রায় সবদিক থেকেই দূষণের শিকার হয়। জনবহুল এই শহরে প্রচুর পরিমাণে যানবাহনের চলাচল ও কলকারখানার আধিক্যের কারণে বায়ু চরম মাত্রায় দূষিত হচ্ছে। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে যে ঢাকা শহরের বায়ুদূষণ এ দেশে ফুসফুসের ক্যান্সার বৃদ্ধির অন্যতম প্রধাণ কারণ। বিভিন্ন কলকারখানা, ইটের ভাটা ও যানবাহন থেকে নির্গত কার্সিনোজেনিক পদার্থ শিশুদের শরীরে সিসার মাত্রা অনেক বাড়িয়ে দেয়। যানবাহন, কলকারখানা ও নির্মাণ এলাকা থেকে মারাত্মক দূষিত পদার্থ, যেমন কালো কার্বন ও ভলাটাইল অর্গানিক পদার্থ নির্গত হয় যা শহরের বায়ু দূষণের প্রধাণ কারণ। ইটের ভাটার ধোঁয়ার সাথে রাসায়নিক পদার্থ, যেমন নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড ও সালফার ডাই অক্সাইড নির্গত হয়। নির্মাণ এলাকার ধুলাতে থাকে ক্ষতিকর কণা, যেমন সিলিকার গুঁড়া যা নিঃশ্বাসের সাথে শরীরে প্রবেশ করলে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ঢাকা শহরের বাতাসে দূষণের মাত্রা সারাবছর একই রকম থাকে না। অক্টোবরে এই দূষণের মাত্রা বাড়তে শুরু করে এবং জানুয়ারিতে গিয়ে সর্বোচ্চ হয় প্রায় ১৮১.৮ মাইক্রোগ্রাম/মিটার৩। জানুয়ারির পরে এই মাত্রাটা কমতে শুরু করে এবং আগস্টে গিয়ে এই মাত্রা দাঁড়ায় ৩১.৩ মাইক্রোগ্রাম/মিটার৩।
Image Source: https://www.thedailystar.net/