দমকলকর্মীরা হচ্ছেন আমাদের সমাজের একদল অঘোষিত হিরো। কারণ বিপদের সময় এই মানুষগুলো তাদের জীবন বাজি রেখে আমাদেরকে রক্ষা করে থাকে। পেশাগত কাজ করতে গিয়ে তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিচ্ছে, সম্প্রতি কিছু গবেষণায় এমন তথ্যের সন্ধান মিলেছে। নানা ধরনের কেমিক্যালের সংস্পর্শে আসার ফলে বাড়ছে প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি। আগুন নেভানোর কাজ করতে গিয়ে দমকলকর্মীরা নানা ধরনের কার্সিনোজেনের সংস্পর্শে আসে যার ফলে সাধারণ মানুষের চেয়ে তাদের প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এই ঝুঁকি সাধারণ মানুষের চেয়ে প্রায় ১.২১ গুণ বেশি কারণ আগুন নেভানোর কাজ করতে গিয়ে তাদেরকে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আসতে হয়, যেমন আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহৃত ফোম ও নানা রকম পদার্থ থেকে সৃষ্ট ধোঁয়া। দুর্ঘটনাবশত কোথাও আগুন লেগে গেলে সেখান থেকে নানা ধরনের কার্সিনোজেন নির্গত হয়, যেমন-বেনজিন, ফর্মালডিহাইড, পলিসাইক্লিক অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বন ও টলুইন এবং এই পদার্থগুলো প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি বহুগুণে বাড়িয়ে তোলে। এগুলো সাধারণত নিঃশ্বাস ও ত্বকের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। এই পদার্থগুলো শুধু ক্যান্সারের জন্যই নয় বরং অন্যান্য বড় বড় স্বাস্থ্য সমস্যার জন্যও দায়ী। এছাড়াও, এর মধ্যে কিছু কিছু রাসায়নিক পদার্থ আছে যেগুলো জিনের উপর প্রভাব ফেলে এবং এর কার্যবিধিকেও পরিবর্তন করে দেয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, নতুন দমকলকর্মীদের তুলনায় যারা দীর্ঘদিন ধরে এই পেশায় কাজ করছেন তাদের এপিজেনেটিক বৈশিষ্ট্যে বেশ ভিন্নতা রয়েছে যা প্রোস্টেট ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। ২০১৯ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার আগুন নেভানোর এই পেশাকে "মানুষের জন্য কার্সিনোজেনিক" হিসাবে চিহ্নিত করেছে। পিপিই এর ব্যবহারের ফলে দমকলকর্মীদের কাজের ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও নিরাপত্তা বেড়েছে যদিও এই জায়গাটা নিয়ে এখনো অনেক কাজ করার বাকি রয়েছে যাতে করে তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি কিছুটা কমানো যায়।