আপনি কী
জানেন যে ব্রেস্ট ক্যান্সার নির্ণয়ে বহুল ব্যবহৃত ও অন্যতম কার্যকরী পদ্ধতি হচ্ছে
ম্যামোগ্রাফি? এটি একটি স্ক্রিনিং টেস্ট এবং খুবই সহজ একটি পদ্ধতি। এর মাধ্যমে ব্রেস্ট টিস্যুর এক্স-রে
করানো হয় এবং সম্ভাব্য কোনো সমস্যা আগে থেকেই সনাক্ত করা যায়। তাই আপনি যদি চেক
আপের জন্য চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার জন্য মনস্থির করে থাকেন তাহলে অবশ্যই একবার
ম্যামোগ্রাফির ব্যাপারে কথা বলে নিতে ভুল করবেন না!
কাদের ম্যামোগ্রাফি টেস্ট করানো উচিত?
বিশ্বজুড়ে ব্রেস্ট ক্যান্সার অন্যতম একটি প্রধাণ ক্যান্সার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধারণত ৪০ বা তদুর্ধ্বদের ক্ষেত্রে এই ক্যান্সারের প্রকোপ দেখা যায় তবে ৭০ বছরের অধিক বয়সীদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের হার দেখা যায়। চিকিৎসকগণ ৪০-৫৪ বছর বয়সীদের বছরে একবার এবং ৫৫ বছরের অধিক বয়সীদের দুই বছর অন্তর অন্তর একবার করে ম্যামোগ্রাফি করানোর জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
এছাড়াও,
নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো কারো মধ্যে দেখা দিলে অবশ্যই একবার ম্যামোগ্রাফি করানোর জন্য
বলা হয়ে থাকে।
- স্তনের আকার বা আকৃতিতে কোনো পরিবর্তন দেখা দিলে
- গোটার মত বা দলার মত কিছু অনুভূত হলে
- পুরু হয়ে বা ফুলে গেলে
- ব্যথা
- চুলকানি
- লাল হয়ে যাওয়া বা ক্ষতের সৃষ্টি হওয়া
- স্তন ভারী অনুভব করা
- স্তন থেকে কোনো কিছু নিঃসৃত হওয়া
আপনি কেন ম্যামোগ্রাফি করাবেন?
ম্যামোগ্রাফি ব্রেস্ট ক্যান্সারকে নির্ণয় করতে পারে না কিন্তু এর লক্ষণগুলো প্রকট হওয়ার আগে সেগুলোকে সনাক্ত করে ফেলে।ম্যামোগ্রাফিতে যদি কোনো অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে তাহলে আপনার চিকিৎসক প্রয়োজনীয় আর কিছু টেস্ট করাবেন এবং ব্রেস্ট টিস্যু থেকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করে তা বায়োপসি টেস্টের জন্য পাঠানো হবে। আপনার ব্রেস্টের অস্বাভাবিক টিস্যুগুলো ক্যান্সার কোষ কিনা তা বায়োপসি টেস্টের ফলাফল থেকে জানা যাবে। যেকোনো পূর্বলক্ষণ ও অস্বাভাবিকতা আগে থেকেই সনাক্ত করার জন্য চিকিৎসকগণ ম্যামোগ্রাফি করানোর জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন। একদম শুরুর দিকে সনাক্ত করা গেলে, চিকিৎসাও খুব তাড়াতাড়ি শুরু করা সম্ভব এবং অবশ্যই তা আপনার জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এই টেস্ট কীভাবে করানো হয়?
দুইভাবে ম্যামোগ্রাফি করানো যায়: স্ক্রিনিং ম্যামোগ্রাফি ও ডায়াগনস্টিক ম্যামোগ্রাফি। স্ক্রিনিং ম্যামোগ্রাফি করতে ১৫-২০ মিনিট সময় লাগে এবং ডায়াগনস্টিক ম্যামোগ্রাফি করতে এর চেয়ে বেশ অনেকটা সময় বেশি প্রয়োজন হয়। ম্যামোগ্রাফি টেস্ট করানোর জন্য আপনাকে একটি বিশেষ এক্স-রে মেশিনের সামনে দাঁড় করানো হবে। এরপর স্তনকে দুইটি প্লেটের মধ্যে রেখে চাপ প্রয়োগ করা হবে এবং স্বল্পমাত্রার রেডিয়েশন প্রয়োগ করে কিছু ছবি তোলা হবে যেমনটা এক্সরেতে করা হয়। দুই প্লেটের মধ্যে স্তন রাখার পর তাতে চাপ প্রয়োগ করে অনেকটা সমতল পৃষ্ঠের ন্যায় করা হয় এবং এর ফলে আপনি ব্যথা অনুভব করতে পারেন। বিভিন্ন দিক থেকে ছবি তোলার জন্য একই প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি করা হতে পারে। এই পদ্ধতির মাধ্যমে এক্স-রের মতো সাদা কালো ছবি তোলা হয়।
ম্যামোগ্রাফি করানোর আগে যে বিষয়গুলো সম্পর্কে
আপনাকে অবশ্যই জানতে ও সচেতন হতে হবে-
- টেস্ট করতে যাওয়ার আগে ডিওডোরেন্ট, পাউডার, লোশন বা পারফিউম ব্যবহার করা যাবে না। এগুলো ব্যবহার করলে এক্স-রে ইমেজে ছোপ ছোপ দাগের সৃষ্টি করতে পারে।
- পিরিয়ডের আগের সপ্তাহে বা পিরিয়ড চলাকালীন ম্যামোগ্রাফ করানো থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এ সময় স্তন স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা ফুলে যায় এবং টেস্টের সময় চাপ প্রয়োগ করলে আপনি বেশি ব্যথা পেতে পারেন।
- আপনার যদি ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট করানো থাকে তাহলে টেস্ট করানোর পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে কথা বলে নিবেন। কারণ এই ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্টের জন্য ছবি তোলার সময় স্তনের বেশ কিছু টিস্যু দৃশ্যমান নাও হতে পারে।
তথ্যসূত্র:
- https://www.cdc.gov/cancer/breast/basic_info/mammograms.htm#:~:text=Regular%20mammograms%20are%20the%20best,before%20it%20can%20be%20felt.
- https://www.hopkinsmedicine.org/health/treatment-tests-and-therapies/mammogram-procedure
- https://my.clevelandclinic.org/health/diagnostics/4877-mammogram
- https://www.mayoclinic.org/tests-procedures/mammogram/about/pac-20384806
- https://www.radiologyinfo.org/en/info/mammo
- https://www.verywellhealth.com/mammogram-what-to-expect-430283
- https://en.m.wikipedia.org/