ক্যান্সার কোনো একক রোগ নয় বরং অনেকগুলো জটিল রোগের সমন্বয়। বিভিন্ন জেনেটিক পরিবর্তনের ফলে অনিয়ন্ত্রিত কোষ বৃদ্ধির ফলে ক্যান্সার হয়।
প্রত্যেক ধরনের ক্যান্সারের প্রভাব ও বিস্তার আলাদা আলাদা। কিছু ক্যান্সার কোষ খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, আবার কিছু ক্যান্সার খুব ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করে। কিছু বিষয়, যেমন ক্যান্সারের স্টেজ (কোন ধাপে রয়েছে) এবং গ্রেড শরীরে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ক্যান্সারকে প্রধাণত দুইভাগে ভাগ করা যায়-
- লিক্যুইড ক্যান্সার, যার মধ্যে রয়েছে ব্লাড ক্যান্সার, যেমন লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা এবং মাল্টিপল মায়েলোমা।
- সলিড টিউমার ক্যান্সার যা শরীরে শক্ত পিন্ডের মতো সৃষ্টি করে, যেমন ব্রেস্ট ক্যান্সার ও প্রোস্টেট ক্যান্সার।
ক্যান্সার শরীরের এক অংশ থেকে অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে, এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় মেটাস্ট্যাসিস। ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসার উপরে মেটাস্ট্যাসিস মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
এছাড়াও, দীর্ঘদিন ধরে মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে তা ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এবং টিউমারের বৃদ্ধি ও মেটাস্ট্যাসিসকে প্রভাবিত করে।
চিকিৎসকরা বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে ধারণা পোষণ করেন যে ক্যান্সার কীভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যেমন-ক্যান্সারের ধরন ও শরীরের কোন অংশে হয়েছে, স্টেজ, গ্রেড, জিন মিউটেশন ও হরমোনাল স্ট্যাটাস।
টিএনএম (TNM) স্টেজিং সিস্টেম চিকিৎসকদের ক্যান্সারের বিস্তার সম্পর্কে বুঝতে সহায়তা করে। এর মাধ্যমে প্রাইমারী (টিউমার ছোট থাকা অবস্থায়) টিউমারের সাইজ, কতগুলো লিম্ফনোড আক্রান্ত হয়েছে এবং মেটাস্ট্যাসিস হয়েছে কিনা তা জানা যায়।
কিছু কিছু ক্যান্সার, যেমন- অ্যাকিউট মাইলয়েড লিউকেমিয়া , গ্লিয়োব্লাস্টোমা এবং আগ্রাসী ধরনের ব্রেস্ট ক্যান্সার খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। অন্যদিকে, কোলোরেক্টাল ক্যান্সার, লো গ্রেডের ব্রেস্ট ক্যান্সার এবং বেশিরভাগ প্রোস্টেট ক্যান্সার খুব ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করে; নিবিড় তত্ত্বাবধানে থাকলে তাৎক্ষনিক চিকিৎসা ছাড়াই এই ক্যান্সারগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।